ভয়ার্ত বন্যা
মো:আবু জাফর (লাল)
একদা সে এসেছিল, জীবিত সেথা
ধরনীর বুকে চলতো ফিরতো -
কতো মাখামাখি কত যে কথা।
জানতো কি সে, হঠাৎ করে মৃত্যুর সাথে হবে দেখা?
গভীর ঘুমে আছে শুয়ে, যে যার রুমে।
মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে।
চারিদিকে শুধু বাঁচার আকুতি!
ভয়ে বিহবল -শুধু আতঙ্কের হাত ছানি!
মরণ বুঝি কেড়ে নেবে, এ জীবন প্রদীপ এখনি।
সহসা ঘরে ঢুকিলো জল -ছোট শিশু ভয়ে বিহবল।
করুন চোখে চাহিল পিতা, কোহিল না কোন কথা ক্ষণকাল।
সহসা হাত ধরে বলিল পিতা, ঘর ছেড়ে বাহির হও তরা।
নাহলে অথৈ জলে হারাব এ জিবন প্রদীপ মোরা।
ঘরের বাহিরে এসে দেখে, পথ, ঘাট, মাঠ সব ই অথৈ জলে ভাসে।
এ সব দেখে হৃদয় পাখি যেনো, হৃদয়ে বসে কাঁদে!
যাত্রার নাই কোন ধরন,কে কোন সময় হানা দিতে পারে যোম দূত মরণ।
পানির মরন ভেদী ঢেউ এর তোড়ে, নিজেকে সামলে চলা -
ঠিক যেনো, আটকে পড়া ভয়ঙ্কর ঐ বিষাদ ঝড়ে।
যে স্রষ্টা গড়েছিল পৃথিবী -বহু রং রাগে।
যার যতটুকু প্রাপ্য, তা না নিয়ে কেউ পারবেনা যেতে এর আগে।
চারিদিকে অথৈ পানি,ভেসে যাচ্ছে শত শত লাশ
যেদিক তাকাই শুধুই যেনো মৃত্যুর হাতছানি।
বুকের মানিক হারিয়ে, হত বিহবল এক নারী,
কি যেনো বুঝাতে চায়, তার করুন চাহনী।
পানিতে যখন বাড়ি ঘর সব ভাসে।
বুঝতে কিছু রইলো বাকি,মৃত্যু যেনো দূরে দাড়িয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকে।
প্রানাধিক কোলের শিশুকে পাতিলে রেখে চিরকুট দেয় সাথে।
বিধাতার ভরসায়, সে শিশু পাতিলে অথৈ জলে ভাসে।
বিদায়ের কালে মুখে ছিলোনা কোন কথা।
হৃদয় ভাঙ্গা কষ্টে যেনো, সৃষ্টি হলো হৃদয়ে যতো ব্যথা!
ভয়ে বিহবল শিশু,যেদিকে তাকায় পানিতে সয়লাব,
গগন বিদারি চিৎকার করে, শিশু মা -মা করে কাঁদে!
ন,মাসের গর্ভধারিনী নারী, অতি কাতর স্বরে আকুতি করে বলে।
না হয় থাকব আমি , এ গর্ভের সন্তান যেনো এ পৃথিবীর
আলোয় জ্বলে।
পাঁচ বছরের শিশু আঁকড়ে ধরে গাছের ডাল
ঈশারায় ডেকে বাঁচার আকুতি জানায়, কম্পিত হৃদয়ে চোখে নিয়ে জল!
অজস্র পানির বাঁধ ভাঙ্গা ঢেউ,মানুস, গরু,পশু পাখি, মৃত্যুর মহামারি থেকে বাদ গেল না কেউ!
এ বিয়োগ বেদনায় কাঁদে সবে কাঁদে, হিংস্র,হায়েনা বেঈমানরা বাদে।
তাই সবে ভেদাভেদ ভূলে, অসহায় পীড়িতদের সেবা দেয় মন খুলে।
কবিতার শিরোনাম: ভয়ার্ত বন্যা।কলমে: আবু জাফর(লাল)।প্রকাশের তারিখ: ২৮/০৮/২০২৪।